রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১১:১৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
সরকার বিরোধী পোস্টে ‘জুলাই যোদ্ধা’ সাকিবের সর্বনাশ বাদুরের মাংস খায় নারীরা” সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদে মানববন্ধন গোপালগঞ্জে দৈনিক কালবেলা প্রত্রিকার প্রতিষ্ঠাবাষীকী পালিত  কোটালীপাড়া জাকের পার্টির জনসভা ও র‌্যালি অনুষ্ঠিত চাদাঁর টাকা না পেয়ে সংখ্যালঘু পরিবারের উপর হামলা ও লুঠপাট  কোটালীপাড়ায় ওলামা মাশায়েখ সম্মেলন অনুষ্ঠিত সংবাদ প্রকাশে ক্ষুব্ধ বিআইডব্লিউটিএর প্রকৌশলী, সাংবাদিককে প্রকাশ্যে হুমকি! পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের নিকট স্বারকলিপি প্রদান করেছে জামায়তে ইসলামী দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় জামিয়া হাউয়া লিল-বানাত ও মিশনের মজলিস  রাজউকে বহিষ্কৃত কর্মচারী পরিচয় বদলে গুরুত্বপূর্ণ শাখায় কাজ করছেন

হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর মাক্কী জীবনঃ

মুফতি আহমাদুল্লাহ
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৭৫ Time View

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জন্ম থেকে হিজরত পর্যন্ত সময়কালকে “মাক্কী জীবন” বলে। যা আনুমানিক ৫৭০ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৬২২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তার জীবনের প্রথম প্রায় ৫৩ বছর ছিল । এ সময়কালকে মৌলিকভাবে দুই ভাগে বিভক্ত করা যায়।

এক, প্রাক নবুওয়াত সময়কাল।
প্রাক নবুওয়াত সময়কাল ছিল জন্ম থেকে ৪০ বছর বয়সে নবুওয়াত প্রাপ্তির পূর্ব পর্যন্ত। এ সময়ে তিনি অত্যন্ত মহৎ ও উত্তম আদর্শের মূর্তপ্রতিক হিসেবে সুপরিচিতি লাভ করেন, যা গোটা মানবজাতির মুক্তির দূত হওয়ার ইঙ্গিত বহন করে।

জন্ম ও শৈশব
মহানবী (সাঃ) আনুমানিক ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে আরব উপদ্বীপের মক্কা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন।  জন্মের আগেই বাবা আবদুল্লাহ এবং মাত্র ছয় বছর বয়সে মা আমিনা পরলোকগমন করেন। ফলে তিনি এতিম হয়ে যান। এরপর দাদা আবদুল মুত্তালিব ও চাচা আবু তালিব তাঁর দেখাশোনা করেন।

কর্ম জীবন
কৈশোরে পরিবারকে সাহায্য করার জন্য তিনি মক্কাবাসীর বকরি চড়ানোর কাজ করতেন এবং এর বিনিময়ে পারিশ্রমিক নিতেন। ১২ বছর বয়সে চাচা আবু তালিবের সঙ্গে সর্বপ্রথম সিরিয়ায় ব্যবসায়িক সফর করেন। পরবর্তীতে অন্যান্য সফরও করেন। ২৫ বছর বয়সে ধনী খাদিজার ব্যবসায় নিযুক্ত হন এবং অসামান্য সাফল্য অর্জন করেন।

হিলফুল ফুযুল গঠন
তিনি ২৫ বছর বয়সে হিলফুল ফুযুল নামক একটি শান্তি সংঘ গঠন করেন, যার উদ্দেশ্য ছিল সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা, অত্যাচারীর হাত থেকে দুর্বলদের রক্ষা করা এবং দুর্বলদের সাহায্য করা।

বৈবাহিক জীবন
খাদিজা ( রাঃ) তাঁর সততা ও বিশ্বস্ততায় মুগ্ধ হয়ে তাঁকে বিবাহের প্রস্তাব দেন। তিনি প্রস্তাব কবুল করেন অতঃপর তাদের মাঝে বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়। হযরত খাদিজা ( রাঃ) থেকে তার চার কন্যা ও দুই পুত্র সন্তান জন্মগ্রহন করেন। তবে পুত্র সন্তান বেশি জীবিত ছিলেন না।

রক্তক্ষয়ী সংঘাতের সুষ্ঠ সমাধান
হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ) এর বয়স যখন ৩৫ বছর, তখন কাবাঘর পুনর্নির্মাণ করা হয়। হাজরে আসওয়াদ পাথরটি কে স্থাপন করবে এ নিয়ে কুরাইশদের মাঝে দ্বন্দ্ব বেধেছিল। মহানবী (সা.) অত্যন্ত কৌশলের মাধ্যমে এর সমাধান করেন, নিজের গায়ের চাদর খুলে তাতে পাথরটি রেখে দেন এবং সকল গোত্রপ্রধানকে চাদরটি ধরতে বলেন, যার ফলে সংঘাতের অবসান ঘটে।

হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন
যখন তার বয়স ৪০ বছরের কাছাকাছি, তখন মক্কার নিকটে হেরা গুহায় তিনি ধ্যানমগ্ন থাকতেন। মানব জীবনের সমস্যার বাস্তব সমাধান নিয়ে গভীর চিন্তায় ডুবে যেতেন।

দুই, নবুওয়াত পরবর্তী সময়কাল।
তিনি ৪০ বছর বয়সে হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন অবস্থায় নবুওয়াত লাভ করেন এবং সর্বপ্রথম তার উপর মহা বিশ্বের মহা বিস্ময়, মহা গ্রন্থ আল কুরআন অবতীর্ণ হয়।
নবুয়াতের পর থেকে মদিনায় হিজরতের পূর্ব পর্যন্ত ১৩ বছর তিনি মক্কায় অবস্থান করেন।

গোপনে ইসলাম প্রচার
নবুওয়াত প্রাপ্ত হয়ে গোপনে ইসলাম প্রচার ও একত্ববাদের দাওয়াত শুরু করেন। এই সময়ে ইসলাম গ্রহণ করেন তার স্ত্রী খাদিজা (রা) চাচাতো ভাই আালী (রা) বন্ধু আবু বকর (রা) পালকপুত্র যায়েদ বিন হারেছা ও সেবিকা উম্মে আাইমান সহ কিছু গরীব- অসহায় ব্যাক্তিবর্গ।

প্রকাশ্যে ইসলাম প্রচার
প্রকাশ্যে ইসলাম প্রচারের নির্দেশ পেয়ে, তিনি সাফা পাহাড়ে উঠে কুরাইশদের প্রকাশ্যে ইসলামের দাওয়াত দেন।এরপর থেকেই তিনি ও তাঁর অনুসারীরা প্রকাশ্যে ইসলাম প্রচারের কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন। এর ফলে দলে দলে মানুষ ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করেন।

কুরাইশদের বিরোধিতা ও নির্যাতন
একত্ববাদের দাওয়াত ছিল মক্কার প্রচলিত বিশ্বাস বিরোধী। এজন্য মক্কার সমাজে উত্তেজনা ও সংঘাতের সৃষ্টি হয়। মুহাম্মদ ( সাঃ) ও তাঁর অনুসারীরা কুরাইশদের পক্ষ থেকে কঠোর বিরোধিতা ও নির্যাতনের শিকার হন।
এই প্রতিকূলতা সত্ত্বেও, তিনি মক্কায় ইসলামের ভিত্তি স্থাপন করেন এবং একত্ববাদ ও নৈতিকতার শিক্ষা প্রচার করতে থাকেন।

মে’ রাজে গমন
কুরাইশদের নির্যাতন যখন চরম পর্যায়ে পৌঁছে এবং নবীজি ( সাঃ) এর অভিভাবক চাচা আবু তালিব ও স্ত্রী খাদিজা ( রাঃ) ইন্তিকাল করেন। তখন আল্লাহ তায়ালা তার হৃদয় ইসলামের জন্য আরো প্রশস্ত করা ও সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য ম’ রাজে নিয়ে যান।

হাবশায় হিজরত
মাহানবী ( সাঃ) কুরাইশদের অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতে
সাহাবায়ে কেরাম কে হিজরতের অনুমতি দেন। অনুমতি পেয়ে এক দল মুসলিম সর্বপ্রথম হাবশায় হিজরত করেন।

বিশ্ব নবী মদিনার পথে
যখন কুরাইশদের নির্যাতন সকল সীমা অতিক্রম করে। এমন কি তারা হযরত মুহাম্মদ ( সাঃ) কে হাত্যা করার ষড়যন্ত্র করে। তখন আল্লাহ তায়ালা তার পেয়ারা নবীকে মদিনায় হিজরত করার অনুমতি দেন। অতঃপর তিনি মদিনায় হিজরত করেন এবং এর মাধ্যমে মাক্কী জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category