বাগেরহাটের খান মনিরুল ইসলাম রাজপথ থেকে কারাগারে,আবার মানুষের মাঝে
জিসান কবিরাজ,খুলনা:-বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক দৃঢ়চেতা নাম খান মনিরুল ইসলাম। বাগেরহাটে জন্ম নেওয়া এই নেতার রাজনীতিতে হাতেখড়ি ছাত্রজীবন থেকেই।অল্প বয়সেই ছাত্ররাজনীতির মাধ্যমে সক্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। সাহস,সংগঠন দক্ষতা এবং নেতৃত্বের কারণে দ্রুতই উঠে আসেন আলোচনায়।
পরবর্তীতে জাতীয় রাজনীতিতে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করেন তিনি।অবিভক্ত ঢাকার মেয়র সাদেক হোসেন খোকার এপিএস হিসেবে কাজ করার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে দায়িত্বশীল রাজনীতির অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।এরপর সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে বিশেষ আস্থা অর্জন করেন তিনি।খালেদা জিয়ার পাশে থেকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে গিয়ে দলের ত্যাগী,নিবেদিত ও লড়াকু সৈনিক হিসেবে পরিচিতি পান তিনি।রাজপথে লড়াই,কারাগারে দীর্ঘ সাত বছর।
রাজনীতির মাঠে বরাবরই ছিলেন,আপসহীন। গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে রাজপথে বারবার সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন তিনি।স্বৈরাচারী শক্তির রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে দাঁড়িয়ে ছিলেন দলের ঢাল হয়ে।কিন্তু এই ত্যাগ ও নিবেদনই একসময় কাল হয়ে দাঁড়ায় তার জীবনে।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বহুল আলোচিত জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে আসামির তালিকায় নাম আসে খান মনিরুল ইসলামেরও।মামলাটি ব্যাপক সমালোচিত হলেও তাকে দীর্ঘ সাত বছর কারাভোগ করতে হয়।
এই সাত বছরে তিনি হারিয়েছেন,জীবনের অনেক মূল্যবান সময়।ব্যক্তিগত সুখ-শান্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন,পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন,প্রিয় এলাকা বাগেরহাটের মানুষের সান্নিধ্য পাননি। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারেননি এবং ভোগ করেছেন চরম আর্থিক ক্ষতি। তবুও তার মনোবল ভেঙে পড়েনি।কারাগারেও ছিলেন অটল,দৃঢ়চেতা এবং সহযোদ্ধাদের জন্য অনুপ্রেরণার প্রতীক।
অবশেষে ২০২৪ সালের ১৮ আগস্ট স্বৈরাচারী শাসনের পতনের পর মুক্তি পান খান মনিরুল ইসলাম।সেদিন দীর্ঘ সাত বছরের কারাজীবনের অবসান হয়।মুক্তির পর তিনি ফিরে আসেন মানুষের মাঝে,ফিরে পান নিজের রাজনৈতিক পরিচিতি ও সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা।
আজ সেই দিনটির এক বছর পূর্তি।এই এক বছরে তিনি আবারও মানুষের সঙ্গে সময় কাটিয়েছেন,এলাকার উন্নয়ন ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থেকেছেন।বাগেরহাটবাসীর কাছে তিনি শুধু একজন রাজনৈতিক নেতা নন,তিনি তাদের ঘরের ছেলে,তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক।
মানুষের ভালোবাসাই শক্তি রাজনীতির দীর্ঘ সংগ্রাম,কারাগারের নিষ্ঠুর দিনগুলো এবং মানুষের প্রতি অগাধ ভালোবাসা—সবকিছু মিলিয়ে খান মনিরুল ইসলাম আজ বাগেরহাটের জনমানুষের নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।