শেখ কামরুজ্জামান (রানা )গোপালগঞ্জ;গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভাই ও ভাইস্তাদের হাতে আনন্দ ঘোষ (৪৫) নামের এক মুদি ব্যবসায়ী খুন হয়েছেন। এ ঘটনায় মারাত্মক আহত হয়েছেন নিহতের স্ত্রী মিতা ঘোষ (৩৫)।
রবিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার উনশিয়া গ্রামের ঘোষ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।আনন্দ ঘোষ উপজেলার আমতলী ইউনিয়নের উনশিয়া গ্রামের মৃত সুধীর ঘোষের ছেলে। ৫ ভাইয়ের মধ্যে আনন্দ ঘোষ ছিল সেজো। বাকি ভাইদের সাথে দীর্ঘদিন ঘরে ছাদের পানি পড়া নিয়ে বিবাদ চলছিল আনন্দ ঘোষের।
কোটালীপাড়া থানাপুলিশ ও স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, আনন্দ ঘোষের বাড়ির ছাদ থেকে পানি পড়ে বাড়ির চলাচলের রাস্তা কর্দমাক্ত হওয়াকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে ভাইদের সাথে বিবাদ চলছিল।রবিবার রাত ৯ টার দিকে এই ঘটনা নিয়ে আনন্দ ঘোষের স্ত্রী মিতা ঘোষের সাথে মেঝভাই কালাচাঁদ ঘোষের ছেলে সৌরভ ঘোষ ও নয়ন ঘোষের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তারা মিতা ঘোষকে কিলঘুষি মারে। এ সময়আনন্দ ঘোষ এগিয়ে এলে তার বড় দুই ভাই কালাচাঁদ ঘোষ, যুগল ঘোষ ও কালাচাঁদের ছেলে দুই ছেলে তার ছেলেরা কাঠের চলা (লাকড়ি) দিয়ে তাকে মারপিট করে।মুমূর্ষ অবস্থায় আনন্দ ঘোষকে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্রেে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সরোজমিনে আজ সোমবার সকালে আনন্দ ঘোষের বাড়িতে দেখা যায় শোকের মাতম। আনন্দ ঘোষের নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে অথৈ ঘোষ বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি সাংবাদিকদের কাছে বলেন, আমার আর নার্স হওয়া হলো না। বাবার খুব শখ ছিল আমাকে নার্স বানানোর আমার আপন কাকা ও কাকাতো ভাইয়েরা বাবাকে খুন করে ফেললো। আমি আমার বাবার হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রতিবেশী বলেন, ছাদের পানি পড়াকে কেন্দ্র করে ঘরোয়াভাবে একাধিকবার সালিশী দরবার হলেও কেউ কাউকে ছাড় দিতে রাজী না। শেষ পর্যন্ত খুন হলো এই তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে।
এ বিষয়ে জানার জন্য আনন্দ ঘোষের অপর চার ভাই গৌরাঙ্গ,কালাচাঁদ,যুগল ও মিলন ঘোষকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি।
কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার হাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাখাওয়াত হোসেন সেন্টু স্যারসহ আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করি। ঘটনার পর থেকে জড়িতরা পলাতক রয়েছে।
তিনি আরো জানান,এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।