১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, নিউজ ডেস্ক:- হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কাস্টম হাউসের গুদাম থেকে ৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরির ঘটনায় চার কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা কাস্টম হাউস কমিশনার এ কে এম নুরুল হুদা আজাদ স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো.সাইদুল ইসলাম সাহেদ,মো.শহীদুল ইসলাম,মাসুম রানা ও আকরাম শেখ। গত শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টা থেকে পরদিন রবিরার সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে কে বা কারা ঢাকা কাস্টমসের গুদামের আলমারির লকার ভেঙে ৫৫ কেজি স্বর্ণ চুরি করে। শুল্ক বিভাগ বলছে,চুরি হওয়া স্বর্ণের মূল্য প্রায় ৪৫ কোটি টাকা। এ ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে থানা পুলিশ তিনজনের জড়িত থাকার তথ্য পায়। তারা হলেন কাস্টমসের সহকারী কর্মকর্তা মো.সাইদুল ইসলাম শাহেদ,মো.শহিদুল ইসলাম ও সিপাহি নিয়ামত হাওলাদার।
এ ঘটনায় করা মামলার তদন্তভার পেয়েছে পুলিশের গোয়েন্দা অপরাধ বিভাগ (ডিবি)।এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজন আটজনের ডিবি হেফাজতে চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। তাদের মধ্যে চারজন কাস্টমস কর্মকর্তাও রয়েছেন।
তদন্তের বিষয়ে ডিবি প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ গণমাধ্যমকে বলেন, এই চক্রের শিকড় আরো অনেক গভীরে। তবে ঘটনায় জড়িত ব্যক্তি যে-ই হোক তাকে ছাড় দেওয়া হবে না।
অন্যদের আইনের আওতায় আনতে বিমানবন্দর কাস্টমসের বাইরের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে। সেখান থেকে ফুটেজ গায়েব করা হয়েছে কি না তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরো অনেককে জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনা হবে জানিয়ে মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, ‘নিয়ম অনুযায়ী যারা বদলি হবেন আর নতুন যারা আসবেন তাদের কাছে সব কিছু বুঝিয়ে দেবেন পুরনোরা। সেখানে কারা কারা গেছেন,অন্য কারো যোগাযোগ ছিল কি না, দায়িত্ব হস্তান্তরে কোনো সমস্যা ছিল কি না,সিসিটিভি লাগানো ছিল কি না,নষ্ট ছিল কি না;সন্দেহভাজনদের আমরা জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় নিয়ে আসব।
এ ঘটনায় কাস্টমসের শীর্ষ পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তা জড়িত আছেন কি না জানতে চাইলে ডিবি প্রধান গণমাধ্যমকে বলেন,বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ঊর্ধ্বতন কেউ জড়িত থাকলেও ছাড় দেওয়া হবে না।
এদিকে,এ ঘটনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং ঢাকা কাস্টম হাউস থেকে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শুরু থেকেই এই চুরির ঘটনা নিয়ে চলছে তোলপাড়। স্বর্ণ চুরির ঘটনার তদন্তের মধ্যেই প্রতিষ্ঠানটির ২৭২ কর্মকর্তাকে একযোগে বদলি করা হয়েছে। এ ছাড়া শাহজালাল বিমানববন্দরে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের মোবাইল ফোন ব্যবহারে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।