January 15, 2025, 7:02 am
শিরোনামঃ
তরুণ্যের ভাবনায় আগামীর বাংলাদেশ”- শীর্ষক কর্মশালা শার্শা সরকারি টেকনিকেল স্কুল এন্ড কলেজ ২ দিনব্যাপি বিজ্ঞান মেলা পশ্চিম গুজরায় লোকনাথ ব্রম্মচারী সেবাশ্রমের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও শ্রীমদ্ভগবদগীতাপাঠ অনুষ্ঠিত চাঁপাইনবাবগঞ্জে লিগ্যাল এইড’র প্রাতিষ্ঠানিক গণশুনানী অনুষ্ঠিত ১০৫ টি ইটভাটায় পরিবেশের সর্বনাশ অবৈধ ৯৯ টি রোহিঙ্গা ডাকাতের লাশ উদ্ধারে রোহিঙ্গাদের আনন্দ-মিছিলও মিষ্টি বিতরণ ঘুষ নিতে গিয়ে ধরা খেলেন ঠাকুরগাঁও আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা কোটালীপাড়ায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছে নবাগত ইউ এন ও সাগুফতা হকের সঙ্গে সাংবাদিকদের মত বিনিময় শীতার্ত জনসাধারনের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ

সারাবিশ্বে প্রশংসায় ভাসছেন চিলমারীর : রিকতা আখতার বানু 

Reporter Name
  • Update Time : Wednesday, December 4, 2024,
  • 18 Time View

হাবিবুর রহমান, চিলমারী প্রতিনিধি :: বিশ্বে বিবিসির ২০২৪ সালের সবচেয়ে অনুপ্রেরণা জাগানো এবং প্রভাবশালী ১০০জন নারীর তালিকা প্রকাশ করেছেন, ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি। চলতি বছরে ৩ডিসেম্বর এই তালিকায় স্থান পেয়েছেন, বাংলাদেশের একমাত্র বিজয়ী নারী প্রতিনিধি। দেশের উত্তরবঙ্গের কুড়িগ্রাম জেলার, চিলমারী উপজেলার রিকতা আখতার বানু।

তিনি পেশায় একজন নার্স এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। যার কারণে আজ তিনি সারাদেশে প্রশংসিত হয়েছেন এবং প্রশংসার ভাসছেন। জলবায়ুকর্মী, সংস্কৃতি ও শিক্ষা, বিনোদন ও ক্রীড়া, রাজনীতি ও অ্যাডভোকেসি এবং বিজ্ঞান, স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি এই পাঁচটি ক্যাটাগরিতে ১০০জন নারীকে তালিকায় বেছে নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে বিজ্ঞান, স্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি বিভাগে স্থান পেয়েছেন।

বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার, চিলমারী উপজেলার রিকতা আখতার বানু। বিবিসির এই তালিকায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের এমন সমস্ত নারীকে স্থান দেওয়া হয়েছে। যারা তাদের কঠিন পরিস্থিতে ও প্রতিবন্ধকতা থাকার  সত্বে ও সমাজে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছেন। রিকতা আখতার বানু সম্পর্কে বিবিসি বলেছেন, তিনি বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের একটি প্রত্যন্ত এলাকার চিলমারী উপজেলায় বাস করেন।

সেখানে প্রতিবন্ধী শিশুকে অভিশাপ হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। রিকতা আখতার বানুর একটি মেয়ে অটিস্টিক। মেয়েটি সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত। রিকতা আখতার বানু তার এই মেয়েকে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মেয়েটিকে ভর্তি করে নিতে অস্বীকৃতি জানান। পরে তিনি তার নিজের জমি বিক্রি করে একটি প্রতিবন্ধী স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। রিকতা আখতার বানুর লার্নিং ডিজঅ্যাবিলিটি স্কুলে এখন প্রায় ৩শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছেন।

স্কুলটিতে প্রতিবন্ধিতার বিষয়ে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছেন। স্কুলটি প্রাথমিক ভাবে অটিস্টিক বা শেখার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা থাকা শিশুদের জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। কিন্তু এখন স্কুলটি বিভিন্ন ধরনের বুদ্ধিবৃত্তিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধিতা থাকা শিশু শিক্ষার্থীদের সেবা দিয়ে থাকেন। বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের এক প্রত্যন্ত গ্রামে বসবাস করেন, নার্স রিকতা আখতার বানু। কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র নদে অববাহিকায় চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জ্যেষ্ঠ নার্স হিসাবে আছেন তিনি। কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের, দক্ষিণ ধনঞ্জয় গ্রামের মৃত নুর মোহাম্মদের কন্যা তিনি।

তার স্বামীর বাড়ি চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের, রমনা সরকার পাড়া গ্রামে। বর্তমানে তার স্বামী আবু তারিক আলমসহ এক ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে বসবাস করছেন তিনি। ওবিবিসি ১০০ নারী উপরোক্ত পরিস্থিতির নারীদের উপরে সৃষ্টি হওয়া প্রভাবকে স্বীকৃতি দিয়ে, এই বছর তাদের উদযাপন করছে যারা। বদলে যাওয়া বিশ্বে তাদের দৃঢ়তার মাধ্যমে পরিবর্তনের জন্য কাজ করছেন।

এছাড়া এই তালিকা জলবায়ু সংকটের প্রভাব পর্যবেক্ষণের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ, তাই জলবায়ু বিষয়ে নেতৃত্ব দেওয়া ব্যক্তিদের উদযাপন করছে, যারা তাদের সমাজকে এর প্রভাব মোকাবিলায় সহায়তা করছেন রিকতা আখতার বানু তাদের মধ্যে একজন। জানাযায়, ২০০৯ সালে রিকতা আখতার বানু প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হলেও এমপিও ভুক্ত হয় ২০২০ সালে।

স্কুলটিতে ২১ জন শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে ১০ জনের বেতন-ভাতা হলেও বাকীরা এখনও আসতে পারেননি বেতন-ভাতার আওতায়। তার নিজের নামে গড়া প্রতিবন্ধী স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন, মেয়ে তানভীন দৃষ্টি মনিকে। প্রায় ১৫ বছর আগে গড়ে তোলা তার স্কুলে এখন শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩০০জন।

আর শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা ২১ জন। রিকতা আখতার বানু এখনও চাকুরী থেকে অবসর না নিলেও বাকী জীবন কাটাতে চান তার বিদ্যালয়ের প্রতিবন্ধী শিশুদের নিয়ে। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স রিকতা আখতার বানু বলেন, এই বিদ্যালয়টি কেন প্রতিষ্ঠা করলাম তার পেছনে অনেক কষ্ট আছে।

আমার মেয়েকে যখন প্রাথমিক স্কুলে দেই, তারা আমার মেয়েকে স্কুল থেকে  বের করে দিয়েছিল। প্রতিবন্ধী বলে তাকে গালি-গালাজও করেছে। তারপর আর তাকে কোথাও ভর্তি করাতে পারি নাই। সেই থেকে বুকের ভিতর অনেক যন্ত্রণা হতো। সেই যন্ত্রণা থেকে আজ আমার এই প্রতিষ্ঠান। আমার মেয়ের কারণে বিশ্বে নারীর তালিকায় আমাকে স্থান দিয়ে সম্মানিত করেছেন। আমি আজ আপ্লুত হয়েছি।

এই কৃতিত্ব শুধু আমার একার নয়। বিবিসি পরিবার এবং আমার জেলার সংবাদকর্মীসহ, আমার কাজে উৎসাহ দেওয়া সকলের জন্য। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহিন শাহ বলেন, আমরা শিক্ষক- কর্মচারীসহ পুরো চিলমারী বাসি আজ আনন্দিত।

তার উন্নতি ও সাফল্য কামনা করছি। এদিকে তার এই বিজয়ের কথা শুনে অনেকেই তাকে অভিনন্দন জানাতে ছুটে আসছেন। 

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

ISO,NO-QMS/012111/0919