মীর খায়রুল আলম, সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার আশাশুনিতে দাপ্তরিক দায়িত্ব জটিলতায় ভেঙে পড়া ব্রীজের সংস্কার না হওয়ায় বেড়ে চলেছে জনদূর্ভোগ। এতে ভোগান্তির চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে এ পথের পথচারীদের। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এলজিইডি বলছে ব্রীজ তার নয়, এটা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতাধীন। অন্যদিকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বলছেন ব্রীজ তার দপ্তরের আওতায় নির্মাণ হলেও দুপাশেই এলজিইডি সড়ক থাকায় তাদের (এলজিইডি) আওতাধীন ব্রীজটি।
আরো জানা গেছে, আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ও শোভনালী ইউনিয়নের মধ্যে খালের উপরে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে নির্মাণ হয় কুদুড়িয়া-বাঁকড়া ব্রীজটি। কিন্তু নিমর্মাণের পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই ভেঙ্গে পড়েছে এই ব্রীজটি। দীর্ঘ দিন ব্রীজটি ভেঙে পড়ে থাকলেও হচ্ছে না কোন সমাধান। আর তাই ভোগান্তিতে পড়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, নদী খনন করায় দুই পাড়ের সংযোগ সড়কে লেগে থাকলেও মাঝের পিলার দুটি ভেঙ্গে পড়ে ব্রীজটা ঝুলে আছে পানির উপর। নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলেই ব্রীজের মাঝের অংশ ডুবে থাকে পানির নিচের। স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমে ভাঙ্গা অংশ ভরাট করে জোড়াতালি দিয়ে চলছে ঝুঁকির মধ্যে চলাচল। ঝুলে থাকার পরও বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, ভ্যান ও ইজিবাইক নিয়ে ঝুঁকির মধ্যে চলাচল করছেন। যাত্রীবাহী ভ্যান ও ইজিবাইককে তাদের যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে চালককে একাই পার হতে দেখা গেছে। তাছাড়া স্থাপিত নাম ফলক সূত্রে দেখা যায়, ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সেতু ও কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় মরিচাপ নদীর উপর ৫৪ লক্ষ ৪ হাজার ৬ শত ৫০ টাকা ব্যয়ে ৬০ ফুট দৈর্ঘের এই ব্রীজটি নির্মাণ করা হয়।
নিত্যদিনের চলাচলকারীরা বলেন, এই সেতুটি অনেক দিন ধরে ভেঙে পড়ে আছে। কোন প্রকার সমাধান হয়নি। আমরা খুব ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছি। ব্রীজ ভাল না থাকায় পন্যবাহী পরিবহন চলাচল করতে পারে না। প্রায় সবধরনের পরিবহনকে এখন উপজেলা সদরে ঘুরে আসতে হচ্ছে। ফলে ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার পথ বেশি পাড়ি দিতে হচ্ছে। এতে বেড়েছে পণ্য পরিবহন খরচ। হঠাৎ অসুস্থ্য হওয়া কোন ব্যক্তিকে নিয়ে উপজেলা হাসপাতালে পৌঁছাতে বেগ পোহাতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের।
এ বিষয়ে আশাশুনি উপজেলা এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম বলেন, ব্র্রীজটি আমাদের নয়। যত দুর জানি প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদপ্তরের। যদি ভেঙ্গে পড়া ব্রীজটি তারা অপসারণ করে তাহলে আমারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এখানে নতুন ব্রীজ করার জন্য চাহিদা পত্র পাঠাতে পারি।
কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা পিআইও মোঃ সোহাগ খান বলেন, ব্র্রীজ টি আমাদের অধিদপ্তর নির্মাণ করলেও এটির দুপাশে এলজিইডি রাস্তা হওয়ায় এটার দায়-দায়িত্ব এলজিইডির।
আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রনি আলম নুর বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। তাছাড়া বিষয়টি কেউ আমাকে জানাননি। তবে দ্রুত জনদুর্ভোগ লাঘবের চেষ্টা করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।