শেখ সেকেন্দার আলী :: খুলনার পাইকগাছায় বিভিন্ন এলাকায় ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে ওঠা সমবায় সমিতির নামে সুদে ব্যাবসা আর অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠছে একের পর এক। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সমবায় সমিতির লাইসেন্স নিয়ে সহজ-সরল গ্রাম্য নারী ও পুরুষের কাজ থেকে বিভিন্ন মুনাফার কথা বলে সঞ্চয় সংগ্রহ করে সেই টাকা চড়া সুদে ঋণ বিতরণের মাধ্যমে চলছে সমবায় ব্যাবসা।
আবার সমিতির কর্তা ব্যক্তিরা নিজেদের পকেটে ভরছে কাড়ি কাড়ি টাকা। নিজেদের মধ্যেও দ্বন্দ্বে আবার ফাঁসও হচ্ছে সেই অর্থ সাথে কাহিনী। পাইকগাছা উপজেলার দেলুটি ইউপির জিরবুনিয়া গ্রাম উন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি ও ম্যানেজারের বিরুদ্ধে ২৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জেলা সমবায় অফিসে লিখিত অভিযোগ করেছেন সাধারণ সম্পাদক। অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে জেলা সমবায় কার্যালয় থেকে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সমিতির সভাপতি ও ম্যানেজারের নানা অনিয়ম দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তুলে প্রতিষ্ঠানের সাধারণ সম্পাদক জেলা সমবায় কার্যালয়ে অভিযোগ করেন।
অভিযোগে জানা যায়,উপজেলার জিরবুনিয়া গ্রাম উন্নয়ন বহুমুখী সমিতির সভাপতি ভোল্টন মন্ডল ও ম্যানেজার অজয় বিশ্বাস পরস্পরের যোগসাজশে সমিতির ২৬ লাখ টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাতের জন্য হস্থ মজুদ রেখেছেন। ম্যানেজার হিসেবের খাতায় না তুলে ৫ লাখ টাকা নিজের কাছে রেখেছেন ম্যানেজার। সমিতির সদস্য হরিণখোলার শিউলী মল্লিকের ঋনের ৫ লাখ পরিশোধ করলেও তাকে খেলাপি দেখানো হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এছাড়াও নীতিমালা ছাড়াই চলতি সঞ্চয় নামে প্রকল্প খুলে ইচ্ছে মত টাকা আদান প্রদান করে দুর্নীতি করা হচ্ছে বলে। জানতে চাইলে সমিতির সভাপতি ভোল্টন মন্ডল বলেন,দুর্নীতি বা অর্থ আত্মসাতের কোন প্রশ্নই উঠেনা। পুর্বের কমিটি এসব করেছে বলে তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, তদন্ত করলে সত্যতা প্রমানিত হবে। উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির বলেন, জেলা সমবায় কর্মকর্তা স্যার বিষয়টি তদন্ত পুর্বক প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আমাকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করে দিয়েছেন।
এমাসেই তদন্ত করা হবে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে। দৈনন্দিন প্রয়োজনের অতিরিক্ত টাকা হস্থ মজুদ রাখার কোন নিয়ম নেই। এছাড়াও উপজেলার জোনাকি সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে জোনাকি গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির দেড় কোটি টাকা আত্মসাত করার অভিযোগে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। উপজেলার আরো একটি সমবায় সমিতিিতে জামানতের টাকা তুলতে না পেরে পাওনা টাকা ফিরে পেতে পৌরসদরের সরল বাজারস্থ জোনাকী গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির অস্থায়ী কার্যালয় ঘেরাও করে সমিতির সদস্যরা।
জামানতের টাকার দাবীতে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় সমিতির নির্বাহী মোঃ আলাউদ্দীন গাজী ও সভাপতি মোহাম্মাদ আলীকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল বলেও জানান ভুক্তভোগী সমিতির সদস্যরা। যদিও দু’ মাস পর থেকে গ্রাহকদের টাকা পর্যায়ক্রমে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়ায় তাদেরকে মুক্ত করা হয়।
এলাকাবাসী জানান, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে ওঠা সমবায় সমিতির কার্যক্রম দেখা ভালো না করলে প্রতারণা শিকার হবে হাজার হাজার সদস্য।