২৭ আগস্ট ২০২৩ নিজস্ব প্রতিবেদক:-দেশে গণতন্ত্র নেই বলেই বিশ্ব আজ হস্তক্ষেপ করছে ড.আব্দুল মঈন খান
সরকারকে উদ্দেশ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.আব্দুল মঈন খান বলেছেন,সারা বিশ্বে এখন প্রচার হয়ে গেছে বাংলাদেশে কোন গণতন্ত্র নেই। সেজন্য এ দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে বিশ্ব আজ হস্তক্ষেপ করছে। তাই স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ছেড়ে দিন,এতে লজ্জার কিছু নেই। শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে‘নাগরিক কণ্ঠ’ আয়োজিত‘গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ভোটাধিকার প্রয়োগে নাগরিক সমাজের ভূমিকা’শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মঈন খান বলেন,‘সরকার মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে, কিন্তু বিপজ্জনক হচ্ছে,তারা যা করে তা পুরোটাই উল্টো। তিনি বলেন,বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছিল গণতন্ত্রের জন্য। এটি সুপ্রতিষ্ঠিত না হয়ে অদৃশ্য হয়ে গেছে। গণতন্ত্র না থাকলে দেশের সৃষ্টিই অর্থহীন।
ড.মঈন খান বলেন, দেশে এখন অলিখিত বাকশাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। গণতন্ত্রের নামে স্বৈরাচারের চেয়ে খারাপ অবস্থা। মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও কাজে উল্টো করে দেশের পরিস্থিতি সঙ্গীন করে তুলেছে আওয়ামী লীগ। ১৪ বছর ধরে তৈরি করা ক্ষমতাসীনদের গণতন্ত্রের ফানুস ফেটে গেছে। উন্নয়নের জোয়ারে একশ’ কোটি টাকার প্রকল্প একহাজার কোটি টাকার প্রকল্প হয়ে যাচ্ছে।
মঈন খান বলেন,বিশ্ব সংস্থাগুলোর কাছে স্পষ্ট হয়ে গেছে,দেশে গণতন্ত্রের লেশমাত্র নেই। তাই তারা বলছে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সংশোধিত সংবিধান দেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। বিএনপি শুরুতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ছিল কারণ,পৃথিবীর কোথাও এ ব্যবস্থা ছিল না। পরে বিএনপি জনগণের চাওয়াকে সম্মান দেখিয়েছিল। বিএনপি জনগণের জন্য রাজনীতি করে।
ড.মঈন খান বলেন, চলমান আন্দোলন শুধু বিএনপির নয়,দেশের সকল মানুষের জন্য আন্দোলন, মানুষের অধিকার মানুষের কাছে ফিরিয়ে দিতে আন্দোলন করছে বিএনপি। তিনি বলেন,তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার জন্য আওয়ামী লীগ ১৭৩ দিন হরতাল করেছিল। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় বলে আওয়ামী লীগ এক সময় দাবি করলেও এখন তাদের কাছে তা হারাম কেন?
নাগরিক কণ্ঠের আহ্বায়ক মো. রমিজ খানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
বিএনপিকে আন্দোলনের দিকে ঠেলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী- নোমান ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপিকে আন্দোলনের দিকে ঠেলে দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান। শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে ‘অনলাইন প্রবাসী বিএনপি সমর্থক পরিষদ’আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নোমান বলেন,সরকার নিজেদের মতো সংবিধান কাটছাঁট করে,তাই আমরা তা মানি না। তারা নির্বাচন কমিশনকে নিজেদের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছে। সরকার রাষ্ট্রযন্ত্র ও প্রশাসনকে ব্যবহার করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। আসলে রাজপথের আন্দোলন-সংগ্রামে জনতার ঢলের কারণে সরকার অন্ধকার দেখছে। সরকারকে মনে রাখতে হবে বুলেটের চেয়ে ব্যালট বেশি শক্তিশালী। জনগণ এবার তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরবে না।
নোমান বলেন,যে নির্বাচনে দিনের ভোট রাতে হয়,সে নির্বাচন আমরা চাই না। এছাড়া যে দেশে গণতন্ত্র নেই, বাক স্বাধীনতা নেই,এমন দেশও আমরা চাই না। আমরা দীর্ঘদিন ধরে এর প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি, সরকার শোনেনি। প্রধানমন্ত্রী নিজেই আমাদের আন্দোলনের দিকে ঠেলে দিয়েছেন।
নোমান বলেন,জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সকল রাজনৈতিক দল আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। একদফা মানেই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশে পরিবর্তন আনা। কিন্তু সরকার কিছুতেই দাবি মানতে চায় না। কারণ তারা জনবিচ্ছিন্ন। তাই এই সরকারকে দেশ-বিদেশের সবাই ধিক্কার জানাচ্ছে।
আয়োজক সংগঠনের নেতা অ্যাডভোকেট পারভীন কাওসার মুন্নীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম,বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন,সহ-স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আক্তার ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ, আয়োজক সংগঠনের মহাসচিব সারোয়ার হোসেন রুবেল প্রমুখ।
আওয়ামী লীগ দিশাহারা- রিজভী ॥ বিএনপির আন্দোলনে লোক সমাগম দেখে আওয়ামী লীগ দিশাহারা হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শনিবার দুপুরে গুলশানের একটি হোটেলে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমানের বিরুদ্ধে মামলায় সাজার প্রতিবাদে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (অ্যাব) আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করার ধারা ওয়ান ইলেভেনের সময় থেকেই শুরু হয়েছে।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক সৈয়দ আবদাল আহমদ, প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল, প্রকৌশলী মো. মোস্তাফা-ই জামান সেলিম, আয়োজক সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব আসাদুজ্জামান চুন্নু, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী,এম আব্দুল্লাহ, নূরুল আমিন রোকন, বিএনপির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড.এবিএম ওবায়দুল ইসলাম প্রমুখ।