মিরু হাসান,স্টাফ রিপোর্টার:-বগুড়ার আদমদীঘিতে প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরের তালিকায় নাম ও বৈধ কাগজপত্র থাকার পর বসবাস করতে পারছেন না এক দম্পতি। ঘরের দখল না পেয়ে প্রতিবেশীর বাড়িতে কষ্টে বসবাস করছেন মানিক ও রিতা দম্পতি। গত ১১ মাস ধরে ঘরটি দখল নিয়ে বৈধতা ছাড়াই বসবাস করছে ছাতনী সরদারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা উজ্জ্বল ও অঞ্জনা বেগম। ঘটনাটি উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়ন ছাতনী গ্রামে প্রধানমন্ত্রী উপহার আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর নিয়ে। এ ঘটনায় আজও পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি উপজেলা নির্বাহী অফিসার টুকটুক তালুকদার। এ নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে? চলছে সমালোচনা।
জানা যায়,মুজিববর্ষ উপলক্ষে গত দুই বছর আগে উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়ন ছাতনী গ্রামের মাঠে অবস্থিত প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের জন্য ১৪টি ঘর তৈরি করা হয়। ইতিমধ্যে ওই ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের ১৪টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে দলিল ও ভূমি অফিসের খারিজ করা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে ঘরগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে। যার মধ্যে দমদমা গ্রামের বাসিন্দা মানিক হোসেন ও রিতা বানু এই দম্পতির নামে একটি ঘর বরাদ্দ ছিলো। বরাদ্দের পর থেকে সেখানে তারা নিয়মিত বসবাস করে আসছিলেন। কিন্তু এই প্রকল্পের ঘর থেকে কর্মস্থল দূরত্ব হওয়ায় মাঝে মধ্যে সেখানে বসবাস করা তাদের অনিয়মিত হয়ে পড়ে। আর তাদের এই অনুপস্থিতে গত ২০২২ সালের ১০ সেপ্টেম্বর তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্রাবণী রায়ের তত্ত্বাবধানে এবং সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাহিদ সুলতানা তৃপ্তির উপস্থিতিতে কোনো নোটিস ছাড়াই লোকজন দিয়ে মানিক হোসেন ও রিতা বানুর ঘরের তালা ভেঙে মালামাল বের করে উঠানে ফেলে রাখেন। এরপর ওই ঘরের প্রকৃত মালিককে সড়িয়ে কোনো বৈধতা ছাড়াই সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের একই গ্রামের বাসিন্দা উজ্জ্বল ও অঞ্জনা এবং আরেক ঘরে শ্যামলী বেগমকে বসবাসের করার জন্য সুযোগ করে দিয়েছেন ইউএনও। এতে করে বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও মানিক হোসেন ও রিতা বানু এই দম্পতি ঘরটিতে বসবাস করা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ঘটনাটির ১১ মাস পেড়িয়ে গেলেও বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার টুকটুক তালুকদার আজ পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। ফলে নিজের ঘর ছাড়া প্রতিবেশীর দেওয়া ঘরে নিদারুণ কষ্টে দিনযাপন করছেন এই দম্পতি।
আশ্রয় নেওয়া অঞ্জনা ও শ্যামলী বেগম জানান, এই ঘরটিতে আমাদের ইউপি চেয়ারম্যান নাহিদ সুলতানা তৃপ্তি থাকতে দিয়েছেন। আমরা এই ঘরের দলিল বা ভূমি অফিসের খারিজ করা কাগজপত্র এখনো পাইনি। শুধু আবেদন করেছি। এ বিষয়ে সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাহিদ সুলতানা তৃপ্তির সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার টুকটুক তালুকদার জানান, আগের ইউএনও এই কাজটি করে গেছেন। এখন যদি মানিক ও রিতা বানু ওই ঘরটিতে বসবাস করতে চাই। তাহলে সরেজমিনে পরিদর্শন করে একটা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বগুড়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ-আল-মারুফ জানান,যাদের নামে বরাদ্দ আছে তারাই থাকবেন। যদি কেউ দখল নিয়ে থাকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।