পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা রেললাইন উদ্বোধন করে দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে আরেকটি মাইলফলক স্থাপন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার রেলপথের উদ্বোধনের মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলোর মানুষের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।
এসময় রেলমন্ত্রী মোঃ নুরুল ইসলাম সুজনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা।
সেনাপ্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন রেলওয়ে সচিব ড. মোঃ হুমায়ুন কবির।
দেশের দীর্ঘতম সেতুর উপর নবনির্মিত রেললাইনের আনুষ্ঠানিক উন্মোচন করার পর, প্রধানমন্ত্রী ভাঙ্গা ভ্রমণের জন্য একটি বিশেষ উদ্বোধনী ট্রেনে চড়েছিলেন, যেখানে হাজার হাজার উল্লসিত মানুষ তাকে স্বাগত জানায়।
গত বছরের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী রেললাইন নির্মাণের কাজ উদ্বোধন করেন।
এছাড়া ঢাকা-যশোর পর্যন্ত পুরো রেলপথ প্রকল্পটি জুন, 2024 সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত 20টি স্টেশন থাকবে যার মধ্যে 14টি নতুন এবং 6টি ইতিমধ্যে রয়েছে। আগের স্টেশনগুলোও আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। একবার সম্পূর্ণ হলে, ট্রেনগুলি 120 থেকে 130 কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম হবে।
ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত প্রতিটি লেভেল ক্রসিংয়ে আন্ডারপাস নির্মাণ করায় ঢাকা-যশোর রেললাইনের কোথাও কোনো রেলক্রসিং থাকবে না।
ঢাকা থেকে ভাঙ্গার দূরত্ব প্রায় ৮২ কিলোমিটার। ঢাকার গেন্ডারিয়া থেকে কেরানীগঞ্জ হয়ে পদ্মা সেতুতে যুক্ত হয়েছে নতুন রেললাইন।
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথ ধরে গেন্ডারিয়া হয়ে কমলাপুর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করতে পারবে।
প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে ১০০টি আধুনিক যাত্রীবাহী কোচ কেনা হয়েছে। তাদের দিয়ে রেক সাজিয়ে নতুন ট্রেন চালু করা হবে।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পটি 3 মে, 2016 তারিখে অনুমোদিত হয়েছিল। তখন এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় 34,989 কোটি টাকা। 22 মে, 2018-এ প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করা হলে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় 39,247 কোটি টাকা। খরচ আরও বাড়তে পারে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পটি চীনের অর্থায়নে নির্মিত হচ্ছে, G2G (সরকার থেকে সরকার) ভিত্তিতে। চীনের ঠিকাদার চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ (সিআরইসি) প্রকল্পের কাজ করছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে চীনের এক্সিম ব্যাংক 266.79 কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছেন বাকি খরচ বাংলাদেশ সরকার অর্থায়ন করছে।