বর্তমানে দেশের মোট জনসংখ্যার ৩১ দশমিক ৫১ শতাংশ মানুষ নগরে বাস করে। ২০৫০ সালে দেশের মোট জনসংখ্যার ৫৮ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ নগরবাসী হবে। ১৯৭৪ সালে নগরে বাস করা মানুষের হার ছিল মোট জনসংখ্যার মাত্র ৯ শতাংশ। নগরায়ণের সবচেয়ে বড় চাপ ঢাকার ওপরে। ঢাকা এখন জনসংখ্যার বিচারে বিশ্বের নবম বৃহত্তম নগর। জাতিসংঘের জনসংখ্যা বিভাগের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকার অবস্থান হবে তৃতীয়। নগরায়ণ পরিকল্পনায় কেবল ঢাকাকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। ঢাকার বাইরে জেলা ও উপজেলা শহর এবং বাজারকেন্দ্রিক মফস্বল শহর রয়েছে। নগরে বসবাসের সুযোগ তৈরি, অর্থায়ন, নগর দারিদ্র্য, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ এবং মানুষের কর্মসংস্থান—এসব বিষয় নগরায়ণের শর্ত। এসব দিকে দৃষ্টি দেওয়া হচ্ছে না। ঢাকা শহরের বয়স ৪০০ বছর, আবার সাম্প্রতিক কিছু পর্যবেক্ষণে তা প্রায় ১ হাজার বছর। দেশের মধ্যাঞ্চলে অবস্থান আর চারপাশে নদনদী থাকায় ঢাকা ছিল স্বাস্থ্যকর এলাকা। কিন্তু এখন তা কল্পচিত্র মাত্র। গবেষণায় দেখা যায়, ১৯৮৯ সালেও ঢাকা শহরের ১৭ শতাংশ এলাকা সবুজ গাছপালায় ঘেরা ছিল, কিন্তু ২০২০ সালে অর্থাৎ মাত্র ৩০ বছরে তা মাত্র ২ শতাংশে নেমে এসেছে। মূলত ২০০৯ সাল থেকে ঢাকার সবুজ ও জলাভূমি এলাকা সবচেয়ে দ্রুত হারে কমেছে। জনসংখ্যার ব্যাপক চাপ ও শহর ব্যবস্থাপনায় পরিকল্পনা ও সঠিক বাস্তবায়নের অভাবে এ শহরের সামগ্রিক পরিবেশের দ্রুত অবনতি হচ্ছে।
এদিকে কাল সোমবার দেশে পালিত হবে বিশ্ব দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘স্থিতিশীল নগর অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ও পুনরুদ্ধারে টেকসই নগর সমূহই চালিকা শক্তি’। বাসযোগ্য ও নিরাপদ আবাসস্থলের বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১৯৮৫ সালে জাতিসংঘ ‘বিশ্ব বসতি দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। পরে ১৯৮৬ সাল থেকে সারা বিশ্বে অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার বিশ্ব বসতি দিবস পালিত হয়ে আসছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সোমবার সকাল ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব বসতি দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শরীফ আহমেদ। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। সভাপতিত্ব করবেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন।