কে এম শহীদুল সুনামগঞ্জ :
সুনামগঞ্জের ইজারাবিহীন ধোপাজান নদীতে চলছে অবৈধভাবে প্রতিনিয়ত বালু- পাথর উত্তোলন এবং দফায় দফায় চাঁদাবাজী।যার ফলে ধোপাজান নদীর পাড়ে থাকা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান,রাস্তাঘাট,কবরস্থানসহ নদী গর্ভে বিলীন হতে চলেছে অসহায় মানুষদের বাড়িঘরসহ ফসলি জমি এবং নদীর পরিবেশ ও ভারসাম্য। প্রায় চার বছর যাবৎ ধোপাজান চলতি নদীর ভারত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ডলুরা বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন যে বালু মিশ্রিত পাথর মহালটি রয়েছে সেটি বন্ধ রয়েছে। যে কারনে বেকার হয়ে পড়েছে ঐ অঞ্চলের হাজার হাজার শ্রমিকেরা। আর এ কারনে নদীর পাড়কেটে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে ঐ সমস্ত শ্রমিকেরা।আর ঐ সমস্ত শ্রমিকদের পুজিঁ করে হরিলুঠের রাজত্ব কায়েম করে চলেছে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট চক্র।বর্তমানে ইজারা বিহীন অবস্থায় রয়েছে এই বালু মিশ্রিত পাথর মহালটি। হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকায় এখন পর্যন্ত কোন ইজারা হয়নি ধোপাজান বালু মহালটির। ধোপাজান নদীর পাড়কাটা ও পরিবেশ রক্ষা করতে হলে এবং সিন্ডিকেটের রাজত্ব কায়েম বন্ধ করতে হলে সরকারের তরফ থেকে বালু- মিশ্রিত ধোপাজান মহালটি ইজারা অতিব জরুরী হয়ে উঠেছে।এই মহালটি ইজারা দিলে এক দিকে যেমন শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের ব্যাবস্তা হবে তেমনি সরকারের রাজস্ব খ্যাতে জমা হবে কোটি কোটি টাকা।অপর দিকে বন্ধ হবে সিন্ডিকেটের রঙ্গলীলা। পাশাপাশি রক্ষা পাবে ধোপাজান নদীর তীর ও পরিবেশ।
বর্তমানে প্রশাসনের নিষেধ অমান্য করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে এখন প্রতিদিন অবাধে শতশত ছোট বড় ষ্টীল বডি ও কাঠের নৌকা যুগে ড্রেজার মেশিন দিয়ে দিনে রাতে চলছে বালু ও পাথর উত্তোলন।
শুধু তাই নয় সরেজমিনে ঘুরে এবং স্থানীয়দের অভিযোগ সূত্রে জানা যায় একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট ইজারা বিহীন অবস্থায় ধোপাজান নদীতে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের সাথে হাত মিলিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে অবৈধ বালু-পাথর উত্তোলনের লক্ষ্য লক্ষ্য টাকার রমরমা ব্যাবসা। পেপার পত্রিকার মাধ্যমে বার বার এসব কর্মকাণ্ডের প্রতিবেদন প্রকাশ হলেও সঠিক কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছেনা বলে মনে করেন সাধারণ মানুষেরা এবং গণমাধ্যমসহ স্থানীয় জন প্রতিনিধিগন।
তাই ধোপাজান নদীর পরবেশ ও ভারসাম্য রক্ষার জন্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবরে অনেক অভিযোগ ও দিচ্ছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধির অনেকে।
জেলা প্রশাসন,পুলিশ প্রশাসন,নৌপুলিশ,বিজিবি,ডিবি পুলিশ,উপজেলা নির্বাহী অফিসার,পরিবেশ অধিদপ্তর সকলের যৌথ প্রচেষ্টায় ও থামানো যাচ্ছে না ধোপাজান নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু- পাথর উত্তোলণ ও চাঁদাবাজি? ধোপাজান নদীতে এমন শক্তিশালী সিন্ডিকেট তৈরী হয়েছে যা প্রশাসনের সকল বাঁধা উপেক্ষা করে সকল সেক্টরের কর্মকর্তাদের বৃদ্দাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রতিদিন লক্ষ্য লক্ষ্য টাকার বালু পাথর উত্তোলন করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে নৌকা যোগে নিয়ে বিক্রি করতে কোন অসুবিধা হয়না তাদের?
শত চেষ্টা করেও কেউ থামাতে পারছেননা ধোপাজান নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু-পাথর উত্তোলন ও দফায় দফায় চাঁদাবাজিসহ সিন্ডিকেট চক্রটিকে?
প্রশাসনের লোকেরা যেখানে অসহায় সেখানে সাধারণ মানুষেরাইবা কিভাবে নদীর পরিবেশ ও ভারসাম্য রক্ষা করবে? সেই ভাবনায় নদীর পাড়ে থাকা অসহায় মানুষেরা শুধু দুচোখ বড়ে ধোপাজান নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন ও বড় বড় ষ্টিল নৌকার শব্দ শুনছেন কান ভরে। এবং পঙ্গপাল নামক বালু ও পাথর ভর্তি নৌকা চলাচলের রঙ্গলীলা ও ইজারা বিহীন ধোপাজান নদীর সিন্ডিকেটের চাঁদা বাজির দৃশ্য দেখছেন দুচোখ ভরে।
এভাবে চলতে থাকলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ধোপাজান নদী কালীদাস সাগরে পরিণত হবে। ধোপাজান নদীর পরিবেশ ও অসহায় মানুষের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি রক্ষা করতে বালু ও পাথর উত্তোলকারী অবৈধ শক্তিশালী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে উর্ধত্বন কর্তৃপক্ষ সঠিক কার্যকরী পদক্ষেপ নিবেন এমনটি আশাবাদ ব্যক্ত করেন নদী পাড়ে থাকা সাধারণ মানুষেরা।
শুধুই তাইনয় অভিযোগের প্রেক্ষিতে বা ধোপাজান নদী সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রশাসনের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তাদের কাছে একটিই উত্তর মিলে,কেউ বলেন তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আবার কেউ কেউ সরে জমিনে গিয়ে অভিযান পরিচালনা করে বালু-পাথর ভর্তি নৌকা ও ড্রেজার আটক করে মামলাও রুজু করেন। আবার কোন কোন কর্মকর্তা সিন্ডিকেটের সাথে হাত মিলিয়ে নিজেরাও জড়িয়ে গেছেন অবৈধ বালু- পাথর ব্যবসায় কর্ম দায়িত্বকে অবহেলা করে। এমনও অভিযোগ রয়েছে কিছু অসাধু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
সরকারের উচ্চ উর্ধতন কর্তৃপক্ষ সরে জমিনে তদন্তের মাধ্যমে ধোপাজান নদী পরিবেশ রক্ষায় করে বালু মহালটিকে ইজারার আওতায় এনে হাজারো শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিবেন এমনটি দাবী নদীর পাড়ে থাকা হাজারো মানুষের। (পর্ব-২) চলবে