December 8, 2024, 5:27 am
শিরোনামঃ
সাতক্ষীরায় জেলা গোয়েন্দা শাখার অভিযানে দুই কারারক্ষিক গ্রেপ্তার পুলিশের কাছ থেকে ছিনতাই করা আসামি গ্রেফতার ইয়াবা ট্যাবলেট সহ মাদক সিন্ডিকেটের মূলহোতা ওয়াহিদুলকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১ বোদা উপজেলায় কালিয়াগঞ্জ ইউনিয়নে ঘরে ঢুকে এক গৃহবধূ কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা দুর্গাপুরে প্রকল্পের টাকা আত্মাসাতের অভিযোগ উঠেছে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বোদা উপজেলায় চারজন মাদক সেবীকে আটক সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে খেজুরগাছ কাটা আর গাছির অনাগ্রহে কমছে রস কালিগঞ্জে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের মাধ্যমে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পেলো শতাধিক রোগী ডিবি পুলিশের এসআই আশরাফুলের বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ ভারত বাংলাদেশি পর্যটকদের মাধ্যমে বিশাল লাভবান হয় : সাখাওয়াত হোসেন

ডুমুরিয়া জলাবদ্ধতা দূরকরণে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

Reporter Name
  • Update Time : Thursday, October 26, 2023,
  • 22 Time View

শেখ মাহতাব হোসেন,ডুমুরিয়া খুলনা:
খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার জলাবদ্ধতা দূরকরণে স্টেকহোল্ডারদের সাথে পলি ব্যবস্থাপনা তথা জোয়ারাধার বাস্তবায়ন বিষয়ক আলোচনা সভা। উত্তরণ ও পানি কমিটি যৌথ আয়োজনে বৃহস্পতিবার ২৬ অক্টোবর সকাল ১১টায় ডুমুরিয়া অফির্সাস ক্লাবে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন ডুমুরিয়া উপজেলা পানি কমিটির সভাপতি ডাক্তার মোহাম্মদ আলী,
প্রধান অতিথি এবিএম শফিকুল ইসলাম,অধ্যক্ষ (অবসরপ্রাপ্ত) সভাপতি,কেন্দ্রীয় পানি কমিটি,
বিশেষ অতিথি উপজেলা পরিষদ ভাইস-চেয়ারম্যান গাজী আব্দুল হালিম।

উক্ত সভায় বক্তব্য রাখেন,চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির বুলু, গোপাল চন্দ্রদে,উপজেলা পানি কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ সেলিম আক্তার স্বপন,ডুমুরিয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় পানি কমিটির সদস্য শেখ মাহতাব হোসেন। পানি কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন আকুন্জি,পানি গবেষক অধ্যাপক হাশেম আলী ফকির,উত্তরণ প্রতিনিধি দিলিপ কুমার সানা,মীর জিল্লুর রহমান,পানি কমিটির নেতা শেখ মোশাররফ হোসেন,আজিজ আকুন্জি,সিনিয়র সাংবাদিক আব্দুস সালাম,ইউপি সদস্যা আরজিনা বেগম,অধ্যপক জি এম আমানুল্লাহ প্রমুখ।

লবণাক্ততা ও বন্যা-জলোচ্ছ্বাস থেকে এলাকাকে মুক্ত করার লক্ষ্যে ১৯৬০-এর দশকে এলাকায় পোল্ডার ব্যবস্থার প্রবর্তন করা হয়।পোল্ডার ব্যবস্থার আওতায় নির্মাণ করা হয় নদীর উভয় তীরে উপকূলীয় বাঁধ ও শুইসগেট। অধিকাংশ নদীকে পোল্ডারের মধ্যে আবদ্ধ করা হয়।পোল্ডারের বাইরের নদীগুলোকেও পোল্ডারের মধ্যের বিল খাল থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়। পোল্ডার নির্মাণের পূর্বে নদীর জোয়ারের পানির সাথে আসা পলি বিলে বা প্লাবন ভূমিতে অবক্ষেপিত হতো,এখন তা অবক্ষেপিত হয় নদী বক্ষে। ফলে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা এবং দেখা দিয়েছে পরিবেশের ব্যাপক বিপর্যয়। উল্লেখ্য যে,পোল্ডার নির্মাণকালীন সময়ে এলাকার ভূ-প্রকৃতি ও জনগণের অভিজ্ঞতা ও পলি ব্যবস্থাপনার বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। বিশেষ করে ভূ-গঠন কাজ বন্ধ হওয়ায় বিলের জমি নীচু রয়ে গেছে এবং পোল্ডারের বাইরের অংশ ও নদী পলি জমে উঁচু হয়েছে।পলি সমস্যা এখন বড়ো সমস্যা হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে।বলা বাহুল্য সমস্ত বিষয়টি এখন পলি ব্যবস্থাপনার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।

এটি বহুবার প্রমাণিত হয়েছে যে,নদী খননের মাধ্যমে নদীকে বাঁচানো সম্ভব নয়।নদী খননের পর ১/২ বৎসরের মধ্যে নদী আবারও পলি দ্বারা ভরাট হয়ে যায়।নদী নাব্যতা হারায় ও ছোট হয়ে খালে পরিণত হয়।নদীর দু’পাশে খননকৃত মাটির ডুমুরিয়া উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হামকুড়া,আপার শৈলমারী,মধ্য ভদ্রা,পূর্ব শালতা,আপার ঘ্যাংরাইল ও আমতলী নদী ইতিমধ্যে মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছে। তেলিগাতী-ঘ্যাংরাইল,পশ্চিম শালতা,জয়খালী এবং লোয়ার শালতা নদীও মৃত্যুর দুয়ারে পৌঁছে গেছে।ধান ও মাছ চাষ হুমকির মধ্যে পড়েছে।বৃষ্টিপাত একটু বেশী হলে এলাকা প্লাবিত হয়ে যাচ্ছে। এর সাথে আইলা,সিডরের মতো ঘটনা ও উচ্চ জোয়ারের চাপে এলাকার পরিস্থিতি মারাত্মক হয়ে উঠছে। ইতিমধ্যে এলাকা থেকে বহু লোক বাস্তুভিটা ত্যাগ করে বসবাস ও কাজের সন্ধানে অন্যত্র চলে গেছে।দিন দিন এ প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।এছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীর উষ্ণায়ন ও সমুদ্র জোয়ারের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে এ অঞ্চল স্থায়ীভাবে নিমজ্জিত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।এলাকার মানুষের আশংকা কার্যকরী কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা না হলে এ এলাকায় বসবাস করা সম্ভব হবে না।

বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০ ও আইডব্লিউএম এর সমীক্ষা বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০-তে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূল এলাকায় সুষ্ঠু পানি ব্যবস্থাপনায় করণীয় বিষয়াদি উল্লেখ করা হয়েছে যার মধ্যে টিআরএম বাস্তবায়ন এবং আঞ্চলিক নদী সমূহকে পুনরুজ্জীবিত করার কথা বলা হয়েছে। ব-দ্বীপ পরিকল্পনায় ডুমুরিয়া এলাকার জন্য হামকুড়া নদী অববাহিকায় ৫টি বিলে এবং তেলিগাতী-ঘ্যাংরাইল অববাহিকায় ৫টি বিলে টিআরএম বাস্তবায়নের বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠান আইডব্লিউএম হামকুড়া,শৈলমারী ও ভদ্রা তথা ২৫, ২৭/১ ও ২৭/২ পোল্ডারের পানি ব্যবস্থাপনা নির্ধারণের জন্য একটি সমীক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে। উক্ত সমীক্ষায় হামকুড়া অববাহিকার মধুগ্রাম অথবা মাধবকাটি বিলে টিআরএম বাস্তবায়নের প্রস্তাব করা হয়েছে।বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড দীর্ঘদিন যাবত হামকুড়া অববাহিকায় টিআরএম বাস্তবায়নের জন্য জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো অত্র এলাকায় টিআরএম বাস্তবায়নের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে না। যার ফলে পরিস্থিতি দিন দিন মারাত্মক অবনতির দিকে ধাবিত হচ্ছে।

এ বিষয়টি সুস্পষ্ট যে,জলাবদ্ধতা ও পরিবেশ সমস্যার মূলে আছে পলি সমস্যা।নদীতে পলি অবক্ষেপণ বন্ধ করতে হবে।এটির উত্তম পথ হচ্ছে প্লাবন ভূমি তথা বিলের মধ্যে জোয়ার-ভাটা চালু করা এবং পোল্ডারের মধ্যে আবদ্ধ নদীগুলো মুক্ত করা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

ISO,NO-QMS/012111/0919