ডুমুরিয়া খুলনা প্রতিনিধি,শেখ মাহতাব হোসেন:-জোয়ার-ভাটার পানি চলাচল করতে পারত না। এতে খালের দুই পাড়ের পাশের জমিগুলো অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা লেগেই থাকত। খুবই উর্বর এই জমিতে রবিশস্যের ভালো ফলন হতো। কিন্তু পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় অনাবৃষ্টিতে ক্ষতির মধ্যে পড়তে হতো কৃষকদের। এসব এলাকার কৃষকেরা নিজেদের জমি বিক্রি করতে চাইলেও ভালো মূল্য পেতেন না।
আটলিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ হেলাল উদ্দিন বলেন, সম্প্রতি মোষকুড়া খালটি চাকুন্দিয়া গ্রামের থেকে ধ্যাংরাইল নদী কাছাকাছি পর্যন্ত ৩৮৪০ ফুট খনন করা হয়। খাল খননের পাশাপাশি দুই পাড়ে চলাচলের জন্য করা হয় প্রশস্ত রাস্তা। এতে পাড়ের রাস্তা এইব্যবহার করে মানুষ বিভিন্ন জায়গায় চলাফেরার সুযোগ পাচ্ছে। এ ছাড়া গ্রামের চিত্র সম্পূর্ণ বদলে গেছে শুধু মোষকুড়া খাল জলাবদ্ধতা লেগেই থাকত ।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিনও ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ আসিফ রহমান বলেন, গত বছরে ডুমুরিয়ায় অনেকগুলো খাল খনন করা হয়েছে। এসব খাল খননে স্থানীয় কৃষক চাষাবাদের ক্ষেত্রে উপকৃত হচ্ছেন। এসব খাল খননের তালিকা গুরুত্ব অনুপাতে করা হয়েছে। তবে খর্নিয়া ইউনিয়নের, টিপনা দনিয়া খালসহ আরও কিছু খাল দ্রুত সময়ের মধ্যে খনন করা প্রয়োজন।
কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (ক্ষুদ্র সেচ) জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত বছরে ডুমুরিয়া উপজেলার রং পুর ইউনিয়নে ২৫ কিলোমিটার খাল খনন করা হয়েছে। খালপাড়ের ২৯ফুট প্রশস্ত মাটির রাস্তা তৈরি করা হয়েছে। এগুলো সফল হওয়ার ইন্টিগ্রেটার রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সম্মতি পানি ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু সহিষ্ণু কৃষি উন্নয়নে । ওয়াটার সেট কমিটির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এতে প্রতিষ্ঠানের সমীক্ষা অনুযায়ী ৯০০ হেক্টর অনাবাদি জমি চাষযোগ্য হয়েছে।
খুলনা ডুমুরিয়া উপজেলায় ডুমুরিয়া সদর ও আটলিয়া ২টি ইউনিয়ন ও একটি বিশাল এই এলাকার জলাবদ্ধতা দূর করতে পেরেছি। ডুমুরিয়া উপজেলার জন্য আরও একটি প্রকল্পের প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে দেওয়া আছে। এটি অনুমোদন পেলে ডুমুরিয়া কৃষিতে বড় ধরনের বিপ্লব ঘটানো যাবে।
উল্লেখ্য খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানায়, জেলায় ৪৪টি নদী রয়েছে। এর মধ্যে ১২টি নদী এখন অস্তিত্ব সংকটে। হামকুড়া, শালতা, হরি, তেলিগাতি, গ্যাংরাইল, শোলমারী, সুতারখালী, গুনাখালী, তালতলা-বাগআচড়া, শিবসা, হাড়িয়া ও আপার শোলমারী নদী এখন আংশিক ও অর্ধেক মৃত। উল্লিখিত নদীগুলোতে চর জেগে নালা হয়ে গেছে। আশপাশের বিলের পানিই ঠিকঠাক নিষ্কাশন হয় না। ভারি বর্ষায় ভয়াবহ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনা-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, নদী খনন করে নদী বাঁচানো কঠিন। উজানের পানি চাপ না থাকলে নদী ভরাট হয় দ্রুত। ফারাক্কা বাঁধের কারণে একসময় উত্তরাঞ্চলের নদী মরে যেত। এখন দক্ষিণাঞ্চলের নদীগুলোও ভরাট হতে শুরু করেছে। এজন্য উজানের পানি প্রবাহ ঠিক রাখা জরুরি। তিনি বলেন, কিছু কিছু নদী খনন আমরা কাজ করছি। তবে খনন করলেও তা বেশি দিন টিকিয়ে রাখা যাবে না। এজন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে।