৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ডুমুরিয়া খুলনা প্রতিনিধি:-অপসিজেন তরমুজ বাণিজ্যিকভাবে মাচায় তরমুজ চাষ করে সফলতা পেয়েছেন ডুমুরিয়ার কৃষকেরা। কম খরচে অধিক ফলন এবং দাম ভালো পাওয়ায় লাভবান চাষি। এর আগে অসময়ে তরমুজ চাষ করে লাভবান হওয়ায় এবার অনেক কৃষক এই তরমুজ চাষ করে লাভের আশায় রয়েছে। বিশেষ জাতের গ্রীষ্মকালীন তরমুজ আবাদে কৃষকদের পরামর্শ ও সহযোগিতা দেয়ার কথা জানায় কৃষি বিভাগ।
ডুমুরিয়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ইউনাইটেড সীড কোম্পানির স্বপ্ন জাতের তরমুজ। এসব তরমুজের ভেতরের অংশের রঙ কখনো হলুদ কখনো লাল। দেখতে যেমন সুন্দর,খেতেও সুস্বাদু,আবাদে খরচ কম। বাজার দরও বেশ চড়া থাকায় খুশি কৃষক।
খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলারপাতি বুনিয়া মৃত্যুঞ্জয় রায়,দিলীপ রায়,ও অনিমেষ রায়সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় প্রায় ১২০ একর জমিতে মাচায় তরমুজ চাষ করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন কৃষকেরা।
তরমুজ চাষী মৃত্যুঞ্জয় রায় বলেন,আমি ইউনাইটেড সীড স্বপ্ন তরমুসের বীজ অসময়ে মাচায় তরমুজ চাষ দেখে উৎসাহিত হয়ে এইবার বাণিজ্যিকভাবে এই তরমুজের আবাদ করি। লেখাপড়ার পর আমি বেকার ছিলাম। একদিন হঠাৎ করে ইউটিউবে দেখি গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন অনেকেই। তখন আমিও অসমেই তরমুজ চাষ করি। আমি এবার দুই একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। এতে আমার খরচ হয়েছে প্রায় ২ লাখ টাকার মতো। আমি আশা করি প্রায় ৫ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারবো।
কথা হয় পাশের শেখের ট্যাক এলাকার মোজা উদ্দিন গাজী,মনসুর,মাসুম,ও আনারুল ইসলাম আনারুল ইসলামনামে সাথে তারা বলেন, আমি প্রতিবারেই সিজিনাল যে তরমুজটা হয় সেটা করে থাকি কিন্তু এবার আমি এই গ্রীষ্মকালীন যে তরমুজ সেটা চাষ করেছি। আমি প্রায় দেড় একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছি এত আমার খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকার মতো। আমি আশা করি তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা তরমুজ বিক্রি করতে পারবো।
আগে বর্ষা মৌসুমে তরমুজ চাষ করতো না কৃষক। কিন্তু প্রযুক্তির উন্নতির ফলে এখন বর্ষাকালেও মাচায় তরমুজ চাষ হচ্ছে। বৃষ্টির পানিতে বীজ যেন পচে নষ্ট না হয় সেজন্য উন্নতমানের পলিথিন ব্যবহার করা হয়েছে। যার ফলে অল্প সময়ের মধ্যে বীজ অঙ্কুরোদগম হয়ে চারা বেরিয়ে আসে। বর্তমানে মাচায় এখন অনেক তরমুজ ঝুলছে। প্রতিটি তরমুজ ৩-৭ কেজি ওজনের। লাল ও হলুদ বর্ণের এ তরমুজগুলো দেখতে যেমন সুন্দর,তেমনি খেতেও অনেক সুস্বাদু। আর অসময়ে এমন সুন্দর তরমুজ দেখতে প্রতিদিন দুরদুরান্ত থেকে সাধারণ মানুষ আসছে তরমুজ ক্ষেতে।
তরমুজ ক্ষেত দেখতে আসা দর্শনার্থী অনিক বলেন, তরমুজগুলো দেখতে অনেক সুন্দর। আর এই সময়ে মাচায় তরমুজ চাষ হয় এটা দেখার জন্যই শহর থেকে ছুটে আসা। দেখার পরে অনেকটা অবাক হয়ে গেলাম। কৃষিতে প্রযুক্তি আজ কৃষিকে অনেক এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। আমরা এখন সারাবছর তরমুজ খেতে পারবো।
তরমুজ চাষি জয়নাল হোসেন জানান, অসময়ে মাচায় তরমুজ চাষের কথা শুনে অনেকেই পাগলামি বলে ভেবেছিল। পরে যৌথভাবে আমরা চাচা ভাতিজা মিলে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রয় এর জন্য এই তরমুজ আবাদ করি। প্রায় ৫০ দিনের কঠোর পরিশ্রমের ফলে এখন আমরা তরমুজের ফলন ভালো দেখতে পাচ্ছি। ৬০ দিনের মাথায় তরমুজ কাটাঁ শুরু করবো। বাজারজাত ভালোভাবে করতে পারলে ও বাজারে দাম ভালো পেলে লাভবান হব আশা করছি।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিস থেকে জানা যায় , মাচায় তরমুজ চাষে উৎপাদন খরচ খুব একটা বেশি না। এই তরমুজ অনেক মিষ্টি ও সুস্বাদু। চাষিরা যাতে তরমুজ কোন অসুবিধা ছাড়াই বাজারজাত করতে পারে সেজন্য আমরা সকল ধরনের সহযোগীতা করবো। নতুন এই পদ্ধতি গোটা উপজেলায় প্রায় ১২০ একর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। আমরা তাদের সকল সহযোগিতা দিয়ে আসছি।