বাগেরহাটের কচুয়ায় কিশোরীকে ধর্ষণের অপরাধে ফেরদাউস শেখ (৪৪) নামে এক কথিত কবিরাজকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। সোমবার দুপুরে বাগেরহাট নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোঃ সাইফুল ইসলাম আসামির অনুপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন। একই সাথে আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ বছরের কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করে আদালত। এছাড়া নির্যাতিত কিশোরীর সন্তানের বয়স ২১ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তার ভরণ পোষনের ব্যয় রাষ্ট্র বহন করবে এমন আদেশ দিয়েছে আদালত। ওই শিশু পিতা-মাতার পরিচয়ে পরিচিত হবে বলেও রায়ে উলেখ করা হয়েছে। শিশুর ভরণ পোষণ ব্যয়িত অর্থ সরকার আসামির বিদ্যামান সম্পত্তি বা ভবিষ্যতে প্রাপ্য সম্পত্তি থেকে আদায় করতে পারবে। আসামি ফেরদাউস শেখ জেলার কচুয়া উপজেলার ঝালডাঙ্গা গ্রামের আবুল হাসান শেখের ছেলে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৮ মার্চ দুপুরের দিকে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে কচুয়া উপজেলার একটি গ্রামের ওই কিশোরীর বাড়িতে প্রবেশ করেন কবিরাজ পরিচয়দানকারী ফেরদাউস শেখ।এক পর্যায়ে কিশোরীকে জিম্মি করে ধর্ষণ করে ফেরদাউস। লোকলজ্জার ভয়ে কিশোরী বিষয়টি কাউকে জানায়নি। এক পর্যায়ে কিশোরী অন্তঃসত্ত¡া হলে বিষয়টি জানাজানি হয়। ঘটনার ৭ মাস পর ভিকটিমের মা বাদী হয়ে ফেরদাউস শেখকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে কচুয়া থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা ও ঘটনার সত্যতা পেয়ে পরের বছর ২০১৫ সালের ৩১ জানুয়ারি আদালতে ফেরদাউস শেখের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা এস আই হুমায়ুন কবির। ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সালের সংশোধিত ৯ (১) ধারায় অভিযুক্ত আসামি ফেরদাউস শেখের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন সিদ্দিকুর রহমান এবং আসামি পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আইনজীবী শেখ আনিছুর রহমান। এড. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি। ধর্ষকের সম্পদ থেকে শিশুর ভরণ পোষণের অর্থ আদায়ের বিষয়টি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। ভবিষ্যতে অপরাধীরা এই ধরনের অপরাধ করার আগে চিন্তা করবে।