December 9, 2024, 4:15 am

উখিয়ায় অপহৃত রোহিঙ্গা শিশু জীবিত উদ্ধার, আটক ৩

Reporter Name
  • Update Time : Sunday, September 3, 2023,
  • 24 Time View

স্টাফ রিপোর্টার:: কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে অপহৃত ৪ বছরের এক শিশুকে জীবিত উদ্ধার করেছে পুলিশ। এঘটনায় অপহরণ চক্রের প্রধান সাদেক সহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে একজন নারীও রয়েছে।

উদ্ধার শিশু মো. রায়হান (৪), সে ক্যাম্প-১৬ এ/১ ব্লকের আবু জাফর ও রেহেনা বেগমের ছেলে।

উখিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী বিষয়টি সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় প্রযুক্তির সহযোগিতায় ও ড্রোন ব্যবহার করে অভিযানের সফলতা পেয়েছেন।

গ্রেপ্তারকৃত তিনজন হলেন, টেকনাফের মোচনী রেজিষ্টার্ড ক্যাম্প-২৬ এর সি ব্লকের মো. আমিনের পুত্র সাদেক হোসাইন (২৫), ও তারই আপন বোন রোকসানা (১৫) এবং একই ক্যাম্পের দিল মোহাম্মদের পুত্র আমির ফয়সাল (২৩)। তাদের মধ্যে অপহরণ চক্রের মূল হোতা সাদেক হোসেন জামতলি বাজার সংলগ্ন জহুর আলমের বাসায় ভাড়া থাকতো।

এদিকে রোববার (৩ সেপ্টেম্বর-) সকাল সাড়ে ১১ টায়, উখিয়া থানা চত্ত্বরে উখিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( উখিয়া সার্কেল) মো: রাসেল এক প্রেস ব্রিফিংয়ে শিশু অপহরণ, মুক্তিপণ দাবি ও অভিযান পরবর্তী আটকের বর্ণনা দেন।

তিনি জানান, গত ২ সেপ্টেম্বর শনিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প মোচনী এলাকা থেকে অপহৃত শিশু রায়হান কে উদ্ধার ও অপহরণের সাথে জড়িত ১ মহিলাসহ ৩ জনকে আটক করেন উখিয়া থানা পুলিশ।আটকরা হচ্ছেন, সাদেক (২৬), ফয়সাল (২৩) ও রোকসানা (১৬)। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন গত ৩০ আগষ্ট সকাল ১১টার দিকে ১৬ নম্বর ক্যাম্প থেকে শিশু রায়হানকে ২০ টাকার লোভ দেখিয়ে অপহরণ করে সাদেক ও ফয়সাল। শিশুটিকে টেকনাফ থানাধীন মুচনী রেজিষ্টার্ড ক্যাম্পের পেছনে দুর্গম পাহাড়ে আটকিয়ে রাখে। সেখানে তার উপর অমানবিক অত্যাচার ও ভয়াবহ নির্যাতন করে শিশুর মা বাবাকে কান্নার শব্দ মোবাইলে শুনিয়ে ২ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। মুক্তিপণ না দিলে, শিশুটিকে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করেন।

এমতাবস্থায় কোনো উপায় না পেয়ে উখিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ভুক্তভোগীর মা রেহেনা বেগম। এরপর তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জড়িতদের গ্রেপ্তারের উদ্দেশ্যে উখিয়া থানার চৌকস আভিযানিক দল দুর্গম পাহাড়ে ঢালে বিভিন্ন ঝুপড়ি ঘরে শিশুটির সন্ধানে অভিযান পরিচালনা করা হয় এবং দিনের বেলা ড্রোনের মাধ্যমে পাহাড়ের উপর থেকে অনুসন্ধান করা হয় দুর্বৃত্তদের অবস্থান।

অবশেষে শনিবার (২সেপ্টেম্বর) রাতে সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী সাদেককে জামতলী থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার দেখানো মতে মুছুনী ক্যাম্পের সি ব্লক থেকে অপহরণ চক্রের আরেক সদস্য তার বোন রোকসানার কাছ থেকে অপহৃত শিশু রায়হানকে উদ্ধার করা হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও বলেন, রায়হানের বাবা-মা রোহিঙ্গাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে অপহরণ চক্রকে মুক্তিপন দেওয়ার জন্য ৪৫ হাজার টাকা ৭০০ টাকা মুক্তিপণ জোগাড় করে তাদের ছেলেটিকে উদ্ধার করার জন্য। কিন্তু এই টাকায় অপহরণ চক্রের সদস্যরা রায়হানকে ছেড়ে দিতে রাজি হয়নি।

উখিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলীর নেতৃত্বে উখিয়া থানার চৌকস দল শনিবার রাতে অভিযান শুরু করে। দূর্গম পাহাড়ের ঢালে আধুনিক প্রযুক্তি ( ড্রোন)’র সহযোগিতায় দুর্বৃত্তদের অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। গভীর রাতে ভারি বৃষ্টিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিশেষ অভিযানে টেকনাফ থানার মুচুনী ক্যাম্পের সি ব্লকের হোসেনের বাসা থেকে অপহরণ চক্রের মহিলা সদস্য রোকসানার (১৬) কাছ থেকে অপহৃত রায়হানকে উদ্ধার করা হয়। সাথে গ্রেপ্তার করা হয় সাদেক ও তার সঙ্গীয় ফয়সালকে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।

উখিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী আরও জানান, পিতা-মাতাকে তাদের অপহৃত শিশুকে হস্তান্তর করতে পারায় খুবই ভালো লাগছে। শিশুকে কাছে পেয়ে খুশিতে আত্মহারা পিতা মাতা।

গ্রেপ্তানকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং অদূর ভবিষ্যতে এরুপ অপহরণকারী চক্রের বিরুদ্ধে পুলিশের জোড়ালো সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন শেখ মোহাম্মদ আলী।

উল্লেখ্য, রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রীক একটি রোহিঙ্গা অপহরনকারী চক্র দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদশী ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর লোকজনকে অপহরণ করে মুক্তিপন আদায় করে যাচ্ছে। স্থানীয় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অক্লান্ত পরিশ্রম ও শত চেষ্টার পরও তাদের অপরাধ কর্মকাণ্ড কোন ভাবেই থামানো যাচ্ছে না।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

ISO,NO-QMS/012111/0919