আমাদের জীবনে ভ্রমণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থ আছে। আর বাঙালির বেড়াতে যাওয়ার কোনো উপলক্ষ লাগে না। হাতে কয়েক দিনের ছুটি পেলেই মন বেড়াতে যাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠে। করোনা নামক মহামারীর কারণে আমরা দীর্ঘ সময় গৃহবন্দী হয়েছিলাম। কিন্তু এখন ধীরে ধীরে ভ্রমণে যাওয়ার সেই নেশা নতুন করে আমাদের মধ্যে জেগে উঠেছে।
অজস্র ভ্রমণ নির্দেশিকা ভ্রমণকারীদের মধ্যে ট্র্যাভেল ও ট্যুরিজমের চাহিদা বাড়িয়ে দিয়েছে। কেউ পাড়ি দেন পাহাড়ে আবার কারও পছন্দ জঙ্গল। অনেকেই আবার সমুদ্রপাড়ে কয়েক দিন কাটিয়ে আসতে চান। একঘেয়ে জীবন থেকে কয়েক দিনের ছুটি নিয়ে বেড়িয়ে এলে শরীর ও মন ঝরঝরে হয়ে ওঠে। একবার গন্তব্যে পৌঁছে গেলে আর কোনো চিন্তা থাকে না।
তবে বেশি দূরে গেলে অনেক সময় নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়। একে অপরিচিত জায়গা, তার উপর সেখানকার মানুষজন, ভাষা, সংস্কৃতি সব কিছুই আলাদা। ফলে কোনো সমস্যা হলে বেড়ানোটাই মাটি হয়ে যাবে। বেড়াতে যাওয়ার আনন্দ নিরাপদে উপভোগ করতে চাইলে কয়েকটি কাজ আগে থেকে করে রাখা জরুরি। কোনো ফ্যামিলি ট্রিপ হোক বা বিজনেস ট্রিপ হয়তো একাকী ভ্রমণ সবকিছুর ক্ষেত্রেই অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটতেই পারে। বেড়াতে যাওয়ার আনন্দে নিজেদের সুরক্ষার কথা ভুলে গেলে চলবে না। তাই দূরে কোথাও যাওয়ার আগে কয়েকটি বিষয় অবশ্যই মেনে চলা জরুরি।
যেখানে বেড়াতে যাবেন বলে ঠিক করেছেন, বাড়িতে বসেই সেই জায়গা সম্পর্ক যতটা জানা সম্ভব জেনে নিন। সেখানকার রাস্তাঘাট, উল্লেখযোগ্য স্থান, থানা, হাসপাতাল সম্পর্কে জেনে রাখুন। প্রয়োজনে কাজে লেগে যেতেই পারে।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের ফটোকপি সঙ্গে রাখুন। ভোটার আইডি কার্ড-এর মতো অত্যন্ত জরুরি কাগজপত্রগুলোর ফটোকপি করিয়ে সঙ্গে রাখুন। খুব দরকার না পড়লে আসলগুলো রাখার ঝুঁকি নেবেন না। কোনো ভাবে একটি কাগজ হারিয়ে গেলে ফিরে এসে আপনিই বিপদে পড়বেন।
কোথায় যাচ্ছেন, কত দিন থাকছেন, কবে ফিরছেন— এই প্রাথমিক তথ্যগুলো পরিজনদের সঙ্গে সকলেই ভাগ করে নেন। কিন্তু এগুলোই যথেষ্ট নয়। বাস, ট্রেন, বিমান সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ও বেড়াতে গিয়ে কোন হোটেলে থাকছেন— এমন বেশ কিছু তথ্যও প্রিয়জনদের জানিয়ে রাখা ভালো।
অনলাইনে হোটেল বুক করার সময়ে যতটুকু সম্ভব বিষয়টি নজরে রাখুন। বাকিটা হোটেলে পৌঁছেই যাচাই করতে হবে। রিসেপশনের ফোন নম্বরটি ফোনে সেভ করে রাখুন। যে কোনো প্রয়োজনে হোটেলকর্মীদের যেন দ্রুত ডাকতে পারেন।
বিমান ভ্রমণের ক্ষেত্রে প্রারম্ভিক ব্রিফিং মন দিয়ে শুনুন। ভ্রমণের সময় সর্বদা সিটবেল্ট বেঁধে রাখবেন। কোনো দরকার হলে সঙ্গে সঙ্গে বিমানবালাকে জানান। বাস বা ট্রেনে ভ্রমণের সময় সঙ্গে অবশ্যই পানির বোতল রাখবেন। রাস্তায় খাওয়ার জন্য বিস্কুট বা শুকনো ধরনের খাবার রাখতে পারেন।
যাদের এলার্জির সমস্যা আছে তারা পথে ধুলাবালি থেকে সাবধান থাকবেন। সঙ্গে শিশু থাকলে শিশুর জন্য হাতের কাছে কয়েক সেট জামা ও তোয়ালে রাখুন।
চলন্ত অবস্থায় বই, খবরের কাগজ কিংবা ম্যাগাজিন পড়বেন না। এতে চোখের ওপর চাপ পড়ে। যাত্রাপথে গান শোনা যেতে পারে। দীর্ঘ ভ্রমণে পা দুটো যতটা সম্ভব ছড়িয়ে বসবেন।